ঢাকা ১১:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মজবুত ও টেকসই বাড়ি নির্মাণে কী কী দরকার

নতুন বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মানতে হয়। নকশা থেকে শুরু করে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হয় অবকাঠামোর দিকে। বাড়ি কতটা মজবুত ও দেখতে কেমন হবে, সেটা নির্ভর করে বাড়ির ডিজাইনের ওপর। এটা তো বলতে গেলে একটা স্থায়ী ও আজীবনের বিনিয়োগ।

তাই আপনার স্বপ্নের বাড়িটি যেন হয় মজবুত, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব—সেদিকে নজর রাখতে হবে। এই বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে বাড়ি নির্মাণে দরকার দক্ষ স্থপতি। আর বাড়ির ভেতর-বাইরের পরিবেশ সুন্দরভাবে সাজাতে সাহায্য নিতে পারেন ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সহকারী প্রকৌশলী আহমেদ নাফিস হাসান বলেন, বাড়ি তো রাজমিস্ত্রিরাও বানাতে পারেন। বিল্ডিং বানানো কঠিন কিছু নয়। কিন্তু কথা হচ্ছে, বানানো বিল্ডিংটা ইকোনমিক হবে নাকি, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

প্রকৌশলী দক্ষ না হলে তিনি রড-সিমেন্ট-ইট সবকিছুই বেশি দেবেন। যে বাড়িটি বানাতে এক কোটি টাকা খরচ হতে পারে, সেটির খরচ হয়তো দেড় কোটি লাগবে। প্রকৌশলী দক্ষ না হলে ‘ফ্যাক্টর অব সেফটি’ ও হবে না। তখন দেখা যাবে ভূমিকম্প হলেই বিল্ডিং ভেঙে পড়বে।

আহমেদ নাফিস হাসান জানান, প্রকৌশলী দক্ষ না হলে বাড়ির নান্দনিকতা নষ্ট হবে। কলাম, বিম এমন জায়গায় প্লেস করবেন বা সাইজ এমন হবে, যা দৃষ্টিকটু লাগবে। তখন একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার যত চেষ্টাই করুক, নান্দনিকতা আর ফেরত আনতে পারবেন না।

প্রকৌশলী দক্ষ না হলে সঠিকভাবে ভেন্টিলেশন করে বাড়ি বানাতে পারবেন না। দেখা যাবে, সূর্যের দিকে বাসার মুখ আর বাতাস পুরোটাই আটকে গেছে কোনো দেয়ালে।

কোন গ্রেডের রড ভালো, কোন সিমেন্ট ভালো, কোন বালু-খোয়া ভালো—এটা একজন দক্ষ প্রকৌশলী সহজেই বুঝতে পারবেন। তাই বাড়ি নির্মাণের আগে অবশ্যই প্রকৌশলীর পরামর্শ নেওয়া উচিত।

বাড়ি তৈরির পূর্বে মাটি পরীক্ষা (সয়েল টেস্ট) করানো জরুরি। মাটি পরীক্ষার পূর্বে অবশ্যই সিভিল ইঞ্জিনিয়ার অথবা স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা বলে নিতে হবে। কারণ, আপনার বাড়ির উচ্চতার সঙ্গে কত গভীরতায় বোরিং করতে হবে, তা তিনিই আপনাকে বলে দেবেন।

ভালো বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো বাড়ির তৈরি প্ল্যান করা। একটি সুন্দর প্ল্যানই ভালো মানের বাড়ির প্রথম পদক্ষেপ। স্থপতিরা মূলত একটি বাড়ির সুন্দর নকশা করে থাকেন। সেই নকশা অনুযায়ী সবাই মিলেই বাড়িটি তৈরি করেন।

বাড়ি তৈরির পর সেটিকে সুন্দরভাবে সাজানোর ব্যাপারে ভাবতে হবে। ঘর হলো মানুষের মনের প্রতিচ্ছবি, সেটা হোক আবাসস্থল বা কর্মক্ষেত্র। আবাসস্থলের ক্ষেত্রে একটি সুন্দর গোছানো ঘর মানুষকে মানসিক শান্তি দেয়। আভিজাত্য ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করে রুচিশীল ঘর।

বোনাঞ্জা স্টাইলের ডিজাইনার সুবর্ণা মোস্তফা জানান, ‘ঘর বা অফিসের সাজসজ্জা যেমন আমাদের প্রভাবিত করে, তেমনি অন্যদের কাছে আমাদের প্রতিনিধিত্বও করে থাকে।

তাই বলে কেবল দামি-দামি আসবাব আর সজ্জা দিয়ে সাজালেই হবে না। সেই সঙ্গে দরকার প্রয়োজনীয় আলো-বাতাসের সুব্যবস্থা ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রের নিরাপদ সংযোগ।

সব জিনিসের পরিমিত সমন্বয় সমাজে রুচিশীল ও অভিজাত ভাবমূর্তি তৈরি করে। কিন্তু এই ঘরের ভেতরের নকশায় সামঞ্জস্য কজনই-বা সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলতে পারেন।

তাই মনের মতো করে আপনার ঘরটি সাজিয়ে নিতে পারেন কোনো ইন্টেরিয়র ডিজাইনের কাছ থেকে। শুধু ঢাকাতেই এখন অনেক ধরনের ইন্টেরিয়র ডিজাইন প্রতিষ্ঠান ও ডিজাইনার আছে, যারা এই সুবিধা দিয়ে থাকে।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

মজবুত ও টেকসই বাড়ি নির্মাণে কী কী দরকার

আপডেট সময় : ০৯:৪৭:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ মে ২০২৩

নতুন বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মানতে হয়। নকশা থেকে শুরু করে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হয় অবকাঠামোর দিকে। বাড়ি কতটা মজবুত ও দেখতে কেমন হবে, সেটা নির্ভর করে বাড়ির ডিজাইনের ওপর। এটা তো বলতে গেলে একটা স্থায়ী ও আজীবনের বিনিয়োগ।

তাই আপনার স্বপ্নের বাড়িটি যেন হয় মজবুত, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব—সেদিকে নজর রাখতে হবে। এই বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে বাড়ি নির্মাণে দরকার দক্ষ স্থপতি। আর বাড়ির ভেতর-বাইরের পরিবেশ সুন্দরভাবে সাজাতে সাহায্য নিতে পারেন ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সহকারী প্রকৌশলী আহমেদ নাফিস হাসান বলেন, বাড়ি তো রাজমিস্ত্রিরাও বানাতে পারেন। বিল্ডিং বানানো কঠিন কিছু নয়। কিন্তু কথা হচ্ছে, বানানো বিল্ডিংটা ইকোনমিক হবে নাকি, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

প্রকৌশলী দক্ষ না হলে তিনি রড-সিমেন্ট-ইট সবকিছুই বেশি দেবেন। যে বাড়িটি বানাতে এক কোটি টাকা খরচ হতে পারে, সেটির খরচ হয়তো দেড় কোটি লাগবে। প্রকৌশলী দক্ষ না হলে ‘ফ্যাক্টর অব সেফটি’ ও হবে না। তখন দেখা যাবে ভূমিকম্প হলেই বিল্ডিং ভেঙে পড়বে।

আহমেদ নাফিস হাসান জানান, প্রকৌশলী দক্ষ না হলে বাড়ির নান্দনিকতা নষ্ট হবে। কলাম, বিম এমন জায়গায় প্লেস করবেন বা সাইজ এমন হবে, যা দৃষ্টিকটু লাগবে। তখন একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার যত চেষ্টাই করুক, নান্দনিকতা আর ফেরত আনতে পারবেন না।

প্রকৌশলী দক্ষ না হলে সঠিকভাবে ভেন্টিলেশন করে বাড়ি বানাতে পারবেন না। দেখা যাবে, সূর্যের দিকে বাসার মুখ আর বাতাস পুরোটাই আটকে গেছে কোনো দেয়ালে।

কোন গ্রেডের রড ভালো, কোন সিমেন্ট ভালো, কোন বালু-খোয়া ভালো—এটা একজন দক্ষ প্রকৌশলী সহজেই বুঝতে পারবেন। তাই বাড়ি নির্মাণের আগে অবশ্যই প্রকৌশলীর পরামর্শ নেওয়া উচিত।

বাড়ি তৈরির পূর্বে মাটি পরীক্ষা (সয়েল টেস্ট) করানো জরুরি। মাটি পরীক্ষার পূর্বে অবশ্যই সিভিল ইঞ্জিনিয়ার অথবা স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা বলে নিতে হবে। কারণ, আপনার বাড়ির উচ্চতার সঙ্গে কত গভীরতায় বোরিং করতে হবে, তা তিনিই আপনাকে বলে দেবেন।

ভালো বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো বাড়ির তৈরি প্ল্যান করা। একটি সুন্দর প্ল্যানই ভালো মানের বাড়ির প্রথম পদক্ষেপ। স্থপতিরা মূলত একটি বাড়ির সুন্দর নকশা করে থাকেন। সেই নকশা অনুযায়ী সবাই মিলেই বাড়িটি তৈরি করেন।

বাড়ি তৈরির পর সেটিকে সুন্দরভাবে সাজানোর ব্যাপারে ভাবতে হবে। ঘর হলো মানুষের মনের প্রতিচ্ছবি, সেটা হোক আবাসস্থল বা কর্মক্ষেত্র। আবাসস্থলের ক্ষেত্রে একটি সুন্দর গোছানো ঘর মানুষকে মানসিক শান্তি দেয়। আভিজাত্য ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করে রুচিশীল ঘর।

বোনাঞ্জা স্টাইলের ডিজাইনার সুবর্ণা মোস্তফা জানান, ‘ঘর বা অফিসের সাজসজ্জা যেমন আমাদের প্রভাবিত করে, তেমনি অন্যদের কাছে আমাদের প্রতিনিধিত্বও করে থাকে।

তাই বলে কেবল দামি-দামি আসবাব আর সজ্জা দিয়ে সাজালেই হবে না। সেই সঙ্গে দরকার প্রয়োজনীয় আলো-বাতাসের সুব্যবস্থা ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রের নিরাপদ সংযোগ।

সব জিনিসের পরিমিত সমন্বয় সমাজে রুচিশীল ও অভিজাত ভাবমূর্তি তৈরি করে। কিন্তু এই ঘরের ভেতরের নকশায় সামঞ্জস্য কজনই-বা সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলতে পারেন।

তাই মনের মতো করে আপনার ঘরটি সাজিয়ে নিতে পারেন কোনো ইন্টেরিয়র ডিজাইনের কাছ থেকে। শুধু ঢাকাতেই এখন অনেক ধরনের ইন্টেরিয়র ডিজাইন প্রতিষ্ঠান ও ডিজাইনার আছে, যারা এই সুবিধা দিয়ে থাকে।