বরেণ্য বুদ্ধিজীবির গর্বিত সন্তান
বাংলাদেশের জাতীয় শিশু সাহিত্যে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছড়াকার চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই শিশু সাহিত্যের সাথে জড়িত। তিনি শিশু সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য অসংখ্য পুরস্কার ও পদকে ভূষিত হয়েছেন। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও স্থানীয় অসংখ্য সংবাদপত্রে তার প্রায় পনেরো হাজার লেখা প্রকাশিত হয়েছে
এস.এস.সি চুয়াডাঙ্গা একাডেমী থেকে এবং চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ থেকে এইচ.এস.সি ও স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি ১৯৭৭ সাল থেকে সাহিত্য ও সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত। তার সম্পাদনায় সবুজ বাংলা, বিভীষিকা, রক্তের আলপনা, চাবুক, প্রতিভা ও ছড়াবার্তা প্রভৃতি সাময়িকী প্রকাশিত হয়। এ সমস্ত সাময়িকীতে যারা লিখেছেন চিতুর দশটি ছড়াগন্থের পাণ্ডুলিপি প্রকাশের জন্য প্রহর গুণছে। তবে সম্প্রতি জুপিটার পাবলিকেশনস ঢাকা এবং ঢাকা শিশু একাডেমী থেকে তার দুটি ছড়াগ্রন্থ “কিশোর বেলা” ও “দেশের জন্য ছড়া ভাষার জন্য ছড়া প্রকাশিত হয়েছে। এযাবৎ তিনি ৩০ হাজারের অধিক লেখা লিখেছেন। ইতিমধ্যে তার ১৫ হাজারের অধিক লেখা প্রকাশিত হয়েছে। সাহিত্য ও সাংবাদিকতা ছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি চুয়াডাঙ্গা ছড়া সংসদ, গ্রামীন সাংবাদিক সংগঠন, চুয়াডাঙ্গা দাবা সংঘ, গণতথ্য বিজ্ঞান ক্লাব, এন এন সাহা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তিনি দৈনিক সংবাদ, দেশবাংলা, জনবার্তা, জাগরণী, গ্রামের ডাক, বিপ্লবী বাংলাদেশ, ইস্পাত, রূপসী বাংলা, গণদেশ, ডিএনও, জনপদ, বিএনএস, গণকন্ঠ ও খুলনা বেতারের সংবাদদাতার দায়িত্ব পালন করেছেন। তার সম্পাদনায় সাপ্তাহিক গণতথ্য দীর্ঘদিন প্রকাশনা অব্যাহত ছিল। এছাড়া দৈনিক চুয়াডাঙ্গা বার্তার নির্বাহী সম্পাদক ও চুয়াডাঙ্গা দর্পনের মুখ্য বার্তা সম্পাদক দায়িত্ব পালন করেছেন। সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের গীতিকারের তালিকাভূক্ত হয়েছেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রিত গণগ্রন্থাকার আয়োজিত একুশে সাহিত্য প্রতিযোগিতায় তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেন্। কেন্দ্রীয় খেলাঘর ঢাকা কর্তৃক ছড়া প্রতিযোগিতায় তিনি প্রথম হোন।চিত্তরঞ্জন সাহা চিতুর বাবা বাংলাদেশের একজন বরেণ্য বুদ্ধিজীবি ছিলেন। তার বাবার নাম এন এন সাহা। মাতার নাম বিমলা বালা সাহা। বাবা এন এন সাহা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সরকারের রাষ্ট্রীয় ও মুজিবনগর সরকারের মনোগ্রাম প্রণেতা, প্রখ্যাত ভাষা সৈনিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট কবিরাজ ও দেশ বরেণ্য চিত্রশিল্পী ছিলেন। ইতিমধ্যে তিনি মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক হিসাবে পদক লাভ করেছেন। মা বিমলা বালা সাহা ছিলেন দানশীল ব্যক্তিত্ব।
চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু এখনও পর্যন্ত প্রতিনিয়ত ছড়া লিখে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তিনি ছড়াকার হিসাবে ব্যাপক প্রসার লাভ করেছেন। তিনি পশ্চিম বঙ্গের নদীয়া ফুলপুরী ছড়া পরিষদ কর্তৃক শিশুরত পদকে ভূষিত হয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা লেখক সংঘ কর্তৃক ১৯৯৬ সালে শিশু সাহিত্যের জন্য পদক লাভ করেন। কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ, দিনাজপুর শতাব্দী ক্লাব, মালিক নুরুন নাহার স্মৃতি পরিষদ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সহ অসংখ্য সংগঠনের পুরস্কার ও পদকে ভূষিত হয়েছেন। এছাড়াও তিনি সম্প্রতি ইউনেস্কো ক্লাব কর্তৃক খুলনা বিভাগের শ্রেষ্ঠ ছড়াকার হিসাবে সম্মাননা ও পদক লাভ করেছ এছাড়াও তিনি চুয়াডাঙ্গা প্রেস ক্লাব আয়োজিত বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় দাবায় চ্যাম্পিয়নশীপ অর্জন করেন। সাংবাদিকতার জন্য বেশ কয়েক বার বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের সনদ পত্র অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি দৈনিক আকাশ খবর পত্রিকার সিনিয়র সাব এডিটর হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই পত্রিকার তার প্রতিদিন “চিমটি” শিরোনামে ছড়া কলাম প্রকাশিত হয়।
তিনি চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি, জেলা শিল্পকলা একাডেমী, পাইন ক্লাব, চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ, চুয়াডাঙ্গা লেখক সংঘের সদস্য ও জাতীয় কবিতা পরিষদ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। পরিবেশ, সাংবাদিক, মানবাধিকার সহ বিভিন্ন বিষয়ে একাধিক সংগঠনের প্রশিক্ষণ লাভ করেছেন। তিনি একজন শিশু সংগঠক হিসাবে কচি-কাঁচার মেলা ও খেলাঘর আসরের জেলার নেতৃত্ব দেন। চিত্তরঞ্জন সাহা চিতুর সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় চুয়াডাঙ্গা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য শিষ্য রয়েছে। যারা ইতিমধ্যে স্ব স্ব ক্ষেত্রে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে। চুয়াডাঙ্গার সাহিত্যমোদীরা চিত্তরঞ্জন সাহা চিতুকে ছড়াসম্রাট বলে ডেকে থাকেন। ছড়া সাহিত্যকে বেগবান করার জন্য তিনি চুয়াডাঙ্গাতে একটি শক্তিশালী ছড়া সংগঠন গঠনের জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। তার ছড়া সাহিত্য আরো প্রসারতা লাভ করুক। সাথে সাথে ছ্ড়ার সাহিত্যে হবিশেষ অবদানের জন্য জাতীয় স্বীকৃতি লাভ করুক সেই প্রত্যাশা করি।