ঢাকা ০৪:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২৬ হাজার ছাড়াল, মৃত্যু ১১১

  • স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৬:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩
  • ৮৪ খবরটি দেখা হয়েছে

বরিশাল বিভাগ জুড়ে অপ্রতিরোধ্য ডেঙ্গুর বিস্তার সমাজে সর্বস্তরে চরম উদ্বেগ বৃদ্ধি করলেও সিটি করপেরেশনসহ পৌরসভাগুলোর তেমন কোন হেলদোল নেই। সরকারি হাসপাতালেই ডেঙ্গু রোগী ভর্তির সংখ্যা ইতোমধ্যে ২৬ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছে ১১১ নারী-পুরুষ ও শিশুর নাম। প্রতিদিনই গড়ে প্রায় সাড়ে ৩শ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। অক্টোবরের পাঁচ দিনেই শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভাগের হাসপাতালগুলোতে প্রায় দেড় হাজার ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ে আরো ৬ জনের জীবন কেড়ে নিয়েছে এ মরণব্যাধী। পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত খারাপের দিকে গেলেও মশাবাহিত এ মরণব্যাধী প্রতিরোধে সরকারি ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর তেমন কোন হেলদোল নেই।

অথচ আগষ্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে বরিশাল বিভাগের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুনেরও বেশী। রোগী ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে ২৫ ভাগ। পুরো সেপ্টেম্বর যুড়ে দৈনিক গড়ে সাড়ে ৩শরও বেশী ডেঙ্গু রোগী সরকারী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

গত আগস্টের ৩১ দিনে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ৪২টি উপজেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তির সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ২০৯ জন। সেপ্টেম্বরে সংখ্যাটা ১০ হাজার ৫২৮ জনে উন্নীত হয়েছে। আর আগষ্টে দক্ষিণাঞ্চলের সরকারি হাসপাতালগুলাতে ডেঙ্গু আক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা যেখানে ছিল ২৯ জন, সেখানে সেপ্টেম্বরের ৩০ দিন ৬২ জন ও চলতি মাসের ৫ দিনে ৬ জনসহ মৃত্যুর মিছিলে নাম উঠেছে ১১১ জনের।

তবে জুলাই মাসে দক্ষিণাঞ্চলের সরকারী হাসপাতাল সমুহে ডেঙ্গু রোগী ভর্তির সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ৪ হাজার। আর ঐ মাসেই এ অঞ্চলে প্রথম ডেঙ্গু রোগী মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী মধ্য জুলাই থেকেই পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে। আগষ্টের শুরুতে তা ভয়াবহ আকার ধারন করে। সেপ্টেম্বরে পরিস্থিতি চলতি বছর সহ এযাবতকালের সর্বাধিক নাজুক পর্যায়ে পৌছে।

ডেঙ্গুর বিস্তার নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করে বরিশাল সিটি করপোরেশন সহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা সদরের পৌরসভাগুলোকে মশক নিধনের পাশাপাশি পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম যোরদারের তাগিদ দেয়া হলেও তেমন কোন কাজ হয়নি বলে অভিযোগ নগরবাসীর।

প্রায় ৫৮ বর্গ কিলোমিটারের বরিশাল নগরীর মশক নিধনে নগর ভবনের জনবল সংকট না থাকলেও মাত্র ১২টি ফগার মেশিনের সচল আছে ১১টি । তবে গত প্রায় ৩ মাস ধরে এ নগরীতে মশক নিধনে তেমন কোন কার্যক্রম নেই বলে অভিযোগ নগরবাসীর। একাধিক সূত্রে নগর ভবনের কাছে মশার ওষুধ মজুত না থাকার কথা বলা হলেও পরিচ্ছন্নতা বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্রে তা স্বীকার করা হয়নি। তাদের মতে, মশক নিধন কার্যক্রম চলমান আছে। যেখানে প্রয়োজন সেখানেই স্প্রে করা হচ্ছে। নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ১৮ জন মশক নিধন কর্মী কাজ করছে বলেও জানান কনজার্ভেন্সী শাখার মশক নিধনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিন। তবে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে হ্যান্ড স্প্রেয়ার সমুহ তুলে নেয়ার কথা জানিয়েছেন কয়েকজন ওয়ার্ড সচিব।

এ অঞ্চলের প্রায় সব জেলা সদর ও উপজেলা সদরের পৌরসভাগুলোরও অবস্থা প্রায় একই। আর ইউনিয়ন পরিষদগুলোর অবস্থা আরো করুন। চলতি বছর শহরের মত গ্রামাঞ্চলেও বিপুল সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুর মিছিলে নাম লেখালেও সেসব এলাকায় মশক নিধন কার্যক্রম বলতে কিছু নেই। অথচ এবার মৃত্যুর তালিকায় গ্রামের বিপুল সংখ্যক নারীরও নাম উঠেছে ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডাঃ শ্যমল কৃষ্ঞ মন্ডল পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনায় অবিলম্বে মশক নিধনে নিবিড় কার্যক্রম বাস্তবায়নের বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন।

৫ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত দক্ষিনাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার সরকারী হাসপাতাল গুলোতে সর্বমোট যে প্রায় ২৬ হাজার ১২৫ ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তি হয়েছেন, তার মধ্যে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ২৪ হাজার ৯৭৫ জন। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ও জেনারেল হাপসতালসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতালসমুহে ভর্তিকৃত প্রায় সাড়ে ৯ হাজার রোগীর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৮১ জনের। যার মধ্যে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই মারা গেছেন ৭৯ জন। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ৩ হাজার সহ জেলাটির বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাড়িয়েছে প্রায় ৬ হাজারে। জেলাটিতে এ পর্যন্ত মৃত ৬ জনের মধ্যে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। দ্বীপজেলা ভোলার হাসপাতালে ভর্তিকৃত প্রায় ৩ হাজার জনের মধ্যে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। পিরোজপুরে ভর্তিকৃত ৪ হাজার ৪শ জনের মধ্যে ১০ জন মারা গেছেন। বরগুনার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তিকৃত প্রায় ৩ হাজারের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে ছোট জেলা ঝালকাঠি সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃত প্রায় ৬৫৩ রোগীর মধ্যে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বরিশাল নগরী সংলগ্ন ৪ উপজেলার এ জেলাটির বেশীরভাগ ডেঙ্গু রোগীই শের্-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে দক্ষিণাঞ্চলের সরকারি হাসপাতালে গত প্রায় ৬ মাসে ২৬ হাজারেরও বেশী ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হলেও বাস্তবে এর তিন গুন মানুষ মশা বাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে মনে করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। মৃতের সংখ্যাও সরকারি হিসেবের চেয়ে আরো অনেক বেশী বলে মনে করছেন এসব চিকিৎসকগন। তাদের মতে, ডেঙ্গু আক্রান্তের প্রায় সবাই প্রাথমিকভাবে স্থানীয় চিকিৎসকের স্মরনাপন্ন হয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। শুধু সংকটাপন্নরাই সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।

চিকিৎসকদের মতে, সময়মত চিকিৎসায় ৯৯ভাগ ডেঙ্গু রোগীই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠছেন। তবে এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহনের বিকল্প নেই।

জনপ্রিয়

বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২৬ হাজার ছাড়াল, মৃত্যু ১১১

আপডেট সময় : ০৬:৩৬:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩

বরিশাল বিভাগ জুড়ে অপ্রতিরোধ্য ডেঙ্গুর বিস্তার সমাজে সর্বস্তরে চরম উদ্বেগ বৃদ্ধি করলেও সিটি করপেরেশনসহ পৌরসভাগুলোর তেমন কোন হেলদোল নেই। সরকারি হাসপাতালেই ডেঙ্গু রোগী ভর্তির সংখ্যা ইতোমধ্যে ২৬ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছে ১১১ নারী-পুরুষ ও শিশুর নাম। প্রতিদিনই গড়ে প্রায় সাড়ে ৩শ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। অক্টোবরের পাঁচ দিনেই শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভাগের হাসপাতালগুলোতে প্রায় দেড় হাজার ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ে আরো ৬ জনের জীবন কেড়ে নিয়েছে এ মরণব্যাধী। পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত খারাপের দিকে গেলেও মশাবাহিত এ মরণব্যাধী প্রতিরোধে সরকারি ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর তেমন কোন হেলদোল নেই।

অথচ আগষ্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে বরিশাল বিভাগের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুনেরও বেশী। রোগী ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে ২৫ ভাগ। পুরো সেপ্টেম্বর যুড়ে দৈনিক গড়ে সাড়ে ৩শরও বেশী ডেঙ্গু রোগী সরকারী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

গত আগস্টের ৩১ দিনে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ৪২টি উপজেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তির সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ২০৯ জন। সেপ্টেম্বরে সংখ্যাটা ১০ হাজার ৫২৮ জনে উন্নীত হয়েছে। আর আগষ্টে দক্ষিণাঞ্চলের সরকারি হাসপাতালগুলাতে ডেঙ্গু আক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা যেখানে ছিল ২৯ জন, সেখানে সেপ্টেম্বরের ৩০ দিন ৬২ জন ও চলতি মাসের ৫ দিনে ৬ জনসহ মৃত্যুর মিছিলে নাম উঠেছে ১১১ জনের।

তবে জুলাই মাসে দক্ষিণাঞ্চলের সরকারী হাসপাতাল সমুহে ডেঙ্গু রোগী ভর্তির সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ৪ হাজার। আর ঐ মাসেই এ অঞ্চলে প্রথম ডেঙ্গু রোগী মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী মধ্য জুলাই থেকেই পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে। আগষ্টের শুরুতে তা ভয়াবহ আকার ধারন করে। সেপ্টেম্বরে পরিস্থিতি চলতি বছর সহ এযাবতকালের সর্বাধিক নাজুক পর্যায়ে পৌছে।

ডেঙ্গুর বিস্তার নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করে বরিশাল সিটি করপোরেশন সহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা সদরের পৌরসভাগুলোকে মশক নিধনের পাশাপাশি পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম যোরদারের তাগিদ দেয়া হলেও তেমন কোন কাজ হয়নি বলে অভিযোগ নগরবাসীর।

প্রায় ৫৮ বর্গ কিলোমিটারের বরিশাল নগরীর মশক নিধনে নগর ভবনের জনবল সংকট না থাকলেও মাত্র ১২টি ফগার মেশিনের সচল আছে ১১টি । তবে গত প্রায় ৩ মাস ধরে এ নগরীতে মশক নিধনে তেমন কোন কার্যক্রম নেই বলে অভিযোগ নগরবাসীর। একাধিক সূত্রে নগর ভবনের কাছে মশার ওষুধ মজুত না থাকার কথা বলা হলেও পরিচ্ছন্নতা বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্রে তা স্বীকার করা হয়নি। তাদের মতে, মশক নিধন কার্যক্রম চলমান আছে। যেখানে প্রয়োজন সেখানেই স্প্রে করা হচ্ছে। নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ১৮ জন মশক নিধন কর্মী কাজ করছে বলেও জানান কনজার্ভেন্সী শাখার মশক নিধনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিন। তবে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে হ্যান্ড স্প্রেয়ার সমুহ তুলে নেয়ার কথা জানিয়েছেন কয়েকজন ওয়ার্ড সচিব।

এ অঞ্চলের প্রায় সব জেলা সদর ও উপজেলা সদরের পৌরসভাগুলোরও অবস্থা প্রায় একই। আর ইউনিয়ন পরিষদগুলোর অবস্থা আরো করুন। চলতি বছর শহরের মত গ্রামাঞ্চলেও বিপুল সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুর মিছিলে নাম লেখালেও সেসব এলাকায় মশক নিধন কার্যক্রম বলতে কিছু নেই। অথচ এবার মৃত্যুর তালিকায় গ্রামের বিপুল সংখ্যক নারীরও নাম উঠেছে ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডাঃ শ্যমল কৃষ্ঞ মন্ডল পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনায় অবিলম্বে মশক নিধনে নিবিড় কার্যক্রম বাস্তবায়নের বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন।

৫ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত দক্ষিনাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার সরকারী হাসপাতাল গুলোতে সর্বমোট যে প্রায় ২৬ হাজার ১২৫ ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তি হয়েছেন, তার মধ্যে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ২৪ হাজার ৯৭৫ জন। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ও জেনারেল হাপসতালসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতালসমুহে ভর্তিকৃত প্রায় সাড়ে ৯ হাজার রোগীর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৮১ জনের। যার মধ্যে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই মারা গেছেন ৭৯ জন। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ৩ হাজার সহ জেলাটির বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাড়িয়েছে প্রায় ৬ হাজারে। জেলাটিতে এ পর্যন্ত মৃত ৬ জনের মধ্যে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। দ্বীপজেলা ভোলার হাসপাতালে ভর্তিকৃত প্রায় ৩ হাজার জনের মধ্যে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। পিরোজপুরে ভর্তিকৃত ৪ হাজার ৪শ জনের মধ্যে ১০ জন মারা গেছেন। বরগুনার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তিকৃত প্রায় ৩ হাজারের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে ছোট জেলা ঝালকাঠি সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃত প্রায় ৬৫৩ রোগীর মধ্যে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বরিশাল নগরী সংলগ্ন ৪ উপজেলার এ জেলাটির বেশীরভাগ ডেঙ্গু রোগীই শের্-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে দক্ষিণাঞ্চলের সরকারি হাসপাতালে গত প্রায় ৬ মাসে ২৬ হাজারেরও বেশী ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হলেও বাস্তবে এর তিন গুন মানুষ মশা বাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে মনে করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। মৃতের সংখ্যাও সরকারি হিসেবের চেয়ে আরো অনেক বেশী বলে মনে করছেন এসব চিকিৎসকগন। তাদের মতে, ডেঙ্গু আক্রান্তের প্রায় সবাই প্রাথমিকভাবে স্থানীয় চিকিৎসকের স্মরনাপন্ন হয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। শুধু সংকটাপন্নরাই সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।

চিকিৎসকদের মতে, সময়মত চিকিৎসায় ৯৯ভাগ ডেঙ্গু রোগীই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠছেন। তবে এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহনের বিকল্প নেই।