ঢাকা ১১:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরিশালের নতুন নগরপিতা কে ?

  • স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৯:২২:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ জুন ২০২৩
  • ৫২ খবরটি দেখা হয়েছে

আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এটি নগরবাসীর জন্য পঞ্চম নির্বাচন। ২০০৩, ২০০৮ ও ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল দলীয় প্রতীকের বাইরে। ২০১৮ এবং এবার ২০২৩ সালের নির্বাচন হচ্ছে সরাসরি দলীয় প্রতীকে।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক আসার পর থেকেই সুুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে একের পর এক অভিযোগ উঠতে থাকে। ২০১৮ সালে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন ভোট কারচুপি ও কেন্দ্র দখলের অভিযোগ এনে দুপুর ১২টার মধ্যেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগ বাদে সব দলের প্রার্থী।

বিগত নির্বাচনের মতো এবারো কারচুপি ও ভোট ডাকাতির আশঙ্কায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও গতবারের আলোচিত মেয়রপ্রার্থী বাসদের ডা: মণীষা চক্রবর্তী। আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাদে অন্যান্য প্রার্থী ইতোমধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে একাধিকবার বক্তব্য দিয়েছেন।

সব দলের অংশগ্রহণ না থাকায় এবারের নির্বাচন নিয়ে জনগণের বিশাল একটি অংশের তেমন কোনো আগ্রহ নেই। তারা এই নির্বাচনকে একতরফা নির্বাচন হিসেবেই ধরে নিয়েছেন। বিগত নির্বাচনে ভোটের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বরিশালে সবসময়ই বিএনপির ভোটব্যাংক বেশি।

তাছাড়া আওয়ামী লীগের বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এবার মেয়র পদে মনোনয়ন না পাওয়ায় মহানগর আওয়ামী লীগের পদধারী সক্রিয় নেতারা অনেকটাই নির্জীব ও নিষ্ক্রিয়।

বার নৌকা প্রতীক পাওয়া মেয়রপ্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাতের পক্ষে কাজ করেছেন সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণ ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব:) জাহিদ ফারুক শামীমের অনুসারীরা।

আওয়ামী লীগের চলমান এই বিভাজন দূর না হওয়ায় ফলাফল ভিন্ন দিকে মোড় নিতে পারে। এ ক্ষেত্রে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতি মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের হাতপাখা ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপসের লাঙ্গল প্রতীক সুবিধাজনক অবস্থানে চলে আসতে পারেন। এ দিকে সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা আহসান হাবীব কামালের ছেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান বিএনপির ভোটব্যাংকের বড় একটি অংশ তার দিকে ঝুঁকে পড়তে পারে।

বরিশাল নগরীর মধ্যে থাকা পলাশপুর ও ভাটারখাল/কেডিসি কলোনির (বস্তি) ভোটারদের মধ্যে নৌকার প্রার্থী টাকা বিলিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন। এ বিষয়ে তাদের কাছে তথ্যপ্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা।

আলোচিত এই কলোনিগুলোতে ১৫ হাজারের বেশি ভোট রয়েছে। এসব ভোট টাকার বিনিময়ে বিক্রি হওয়ার ইতিহাস রয়েছে। দুই প্রার্থীর অভিযোগ সত্য হলে আজকের ফলাফলে নৌকার প্রার্থী অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন।

বরিশালের সিটির নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে নয়া দিগন্তের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি প্রফেসর শাহ সাজেদা জানান, ২০১৮ সালে বরিশাল সিটি নির্বাচন যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি, তার প্রমাণ তো তখনকার মিডিয়াগুলো দেখলেই পাওয়া যায়।

দুপুরের মধ্যেই একজন ছাড়া অন্য সব মেয়রপ্রার্থীর নির্বাচন বর্জনের ঘোষণার পরও কি সেই নির্বাচনকে সুষ্ঠু নির্বাচন বলার সুযোগ আছে?

তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশন সবাইকেই দায়িত্ব নিতে হবে। সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এর নেগেটিভ প্রভাব পড়বে।

২০২১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বরিশাল সিটি করপোরেশনের মোট জনসংখ্যা প্রায় ছয় লাখ। তবে ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৭৪ হাজার ৯৯৫ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ৩৮ হাজার ৭১ জন এবং পুরুষ ভোটার এক লাখ ৩৬ হাজার ৯২৪ জন। বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

বরিশাল নগরীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটার রয়েছে ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ১৪ হাজার ৯১৭ জন, আর সবচেয়ে কম ভোটার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচ হাজার ১৯২ জন।
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ১৬৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সাতজন মেয়রপ্রার্থী। এবার নির্বাচনে ৩০টি ওয়ার্ডে ১২৬টি কেন্দ্রের ৮৯৪ কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

ভোট পর্যবেক্ষণে ১১৪৬টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
ভোটে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চার হাজার ৪০০ পুলিশ, আনসার, এপিবিএন, র‌্যাব দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন।

উন্নয়নের প্রশ্নে বিএনপির সমর্থকরাও আমাকে ভোট দেবে : খোকন
আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত বলেছেন, সবকিছু ম্যান টু ম্যান ভেরি করে। বিজয়ী হলে বরিশালের উন্নয়ন করার নিশ্চয়তা আমি দিয়েছি। যার কারণে জনগণ আমাকে ভোট দেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

সেই সাথে বিএনপির সমর্থকরাও মনে করছে আমাকে ভোট দিতে পারলে নগরবাসী সেবা পাবে। দল-মত নির্বিশেষে সব মানুষ আমাকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেবে।

রোববার বেলা দেড়টায় নগরের সদর রোডে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় নির্বাচনের পরিবেশ আর প্রতিপক্ষ প্রার্থীর বিভিন্ন অভিযোগ খণ্ডন করে তিনি বলেন, যেহেতু আমি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আমার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ থাকতেই পারে, করতেই পারে। কিন্তু আমার দৃষ্টিতে সবকিছু স্বাভাবিক ও চমৎকার পরিবেশ দেখতে পাচ্ছি।

এখানে কোনো অস্বাভাবিক কিছু দেখতে পাচ্ছি না।
খোকন আরো বলেন, অভিযোগ যে কেউ করতে পারে। কোনো বিষয়ে আমি পাল্টা জবাবও দিতে চাই না। তবে আমি বলব নির্বাচনের পরিবেশটা ভালো আছে। এখানে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। সংবাদ সম্মেলনে তার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, সাবেক সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা আফরোজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আ’লীগ প্রার্থীর বহিরাগত নেতাকর্মীতে বরিশাল ছেয়ে গেছে : ইকবাল হোসেন তাপস বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বহিরাগত নেতাকর্মীতে বরিশালের বিভিন্ন হোটেল ও রেস্ট হাউজ ছেয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস।

তা ছাড়া ‘এলাকা ঘেরাও করে গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা বস্তি বা কলোনির ভোটারদের টাকা দিচ্ছে, নির্বাচন কমিশন একপাক্ষিক আচরণ অব্যাহত রেখেছে এবং শেষ সময়ে এসেও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি’ বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

রোববার সকাল ১০টায় তার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন তাপস। তিনি বলেন, শহরের হোটেল, রেস্ট হাউজ সবগুলো বহিরাগত লোকজনে ভরা। প্রশাসন বহিরাগত সরাতে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করছে না। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এখনো তৈরি হয়নি। স্থানীয় প্রশাসন নিরপেক্ষতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

খুবই দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, দু’টি গোয়েন্দা সংস্থা তারা আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে নগ্নভাবে ভোট চাইছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের সাধারণ কর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমরা এখন শঙ্কিত হয়ে পড়েছি। সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক মহসিন উল ইসলাম হাবুল উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

বরিশালের নতুন নগরপিতা কে ?

আপডেট সময় : ০৯:২২:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ জুন ২০২৩

আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এটি নগরবাসীর জন্য পঞ্চম নির্বাচন। ২০০৩, ২০০৮ ও ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল দলীয় প্রতীকের বাইরে। ২০১৮ এবং এবার ২০২৩ সালের নির্বাচন হচ্ছে সরাসরি দলীয় প্রতীকে।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক আসার পর থেকেই সুুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে একের পর এক অভিযোগ উঠতে থাকে। ২০১৮ সালে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন ভোট কারচুপি ও কেন্দ্র দখলের অভিযোগ এনে দুপুর ১২টার মধ্যেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগ বাদে সব দলের প্রার্থী।

বিগত নির্বাচনের মতো এবারো কারচুপি ও ভোট ডাকাতির আশঙ্কায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও গতবারের আলোচিত মেয়রপ্রার্থী বাসদের ডা: মণীষা চক্রবর্তী। আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাদে অন্যান্য প্রার্থী ইতোমধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে একাধিকবার বক্তব্য দিয়েছেন।

সব দলের অংশগ্রহণ না থাকায় এবারের নির্বাচন নিয়ে জনগণের বিশাল একটি অংশের তেমন কোনো আগ্রহ নেই। তারা এই নির্বাচনকে একতরফা নির্বাচন হিসেবেই ধরে নিয়েছেন। বিগত নির্বাচনে ভোটের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বরিশালে সবসময়ই বিএনপির ভোটব্যাংক বেশি।

তাছাড়া আওয়ামী লীগের বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এবার মেয়র পদে মনোনয়ন না পাওয়ায় মহানগর আওয়ামী লীগের পদধারী সক্রিয় নেতারা অনেকটাই নির্জীব ও নিষ্ক্রিয়।

বার নৌকা প্রতীক পাওয়া মেয়রপ্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাতের পক্ষে কাজ করেছেন সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণ ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব:) জাহিদ ফারুক শামীমের অনুসারীরা।

আওয়ামী লীগের চলমান এই বিভাজন দূর না হওয়ায় ফলাফল ভিন্ন দিকে মোড় নিতে পারে। এ ক্ষেত্রে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতি মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের হাতপাখা ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপসের লাঙ্গল প্রতীক সুবিধাজনক অবস্থানে চলে আসতে পারেন। এ দিকে সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা আহসান হাবীব কামালের ছেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান বিএনপির ভোটব্যাংকের বড় একটি অংশ তার দিকে ঝুঁকে পড়তে পারে।

বরিশাল নগরীর মধ্যে থাকা পলাশপুর ও ভাটারখাল/কেডিসি কলোনির (বস্তি) ভোটারদের মধ্যে নৌকার প্রার্থী টাকা বিলিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন। এ বিষয়ে তাদের কাছে তথ্যপ্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা।

আলোচিত এই কলোনিগুলোতে ১৫ হাজারের বেশি ভোট রয়েছে। এসব ভোট টাকার বিনিময়ে বিক্রি হওয়ার ইতিহাস রয়েছে। দুই প্রার্থীর অভিযোগ সত্য হলে আজকের ফলাফলে নৌকার প্রার্থী অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন।

বরিশালের সিটির নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে নয়া দিগন্তের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি প্রফেসর শাহ সাজেদা জানান, ২০১৮ সালে বরিশাল সিটি নির্বাচন যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি, তার প্রমাণ তো তখনকার মিডিয়াগুলো দেখলেই পাওয়া যায়।

দুপুরের মধ্যেই একজন ছাড়া অন্য সব মেয়রপ্রার্থীর নির্বাচন বর্জনের ঘোষণার পরও কি সেই নির্বাচনকে সুষ্ঠু নির্বাচন বলার সুযোগ আছে?

তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশন সবাইকেই দায়িত্ব নিতে হবে। সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এর নেগেটিভ প্রভাব পড়বে।

২০২১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বরিশাল সিটি করপোরেশনের মোট জনসংখ্যা প্রায় ছয় লাখ। তবে ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৭৪ হাজার ৯৯৫ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ৩৮ হাজার ৭১ জন এবং পুরুষ ভোটার এক লাখ ৩৬ হাজার ৯২৪ জন। বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

বরিশাল নগরীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটার রয়েছে ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ১৪ হাজার ৯১৭ জন, আর সবচেয়ে কম ভোটার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচ হাজার ১৯২ জন।
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ১৬৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সাতজন মেয়রপ্রার্থী। এবার নির্বাচনে ৩০টি ওয়ার্ডে ১২৬টি কেন্দ্রের ৮৯৪ কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

ভোট পর্যবেক্ষণে ১১৪৬টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
ভোটে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চার হাজার ৪০০ পুলিশ, আনসার, এপিবিএন, র‌্যাব দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন।

উন্নয়নের প্রশ্নে বিএনপির সমর্থকরাও আমাকে ভোট দেবে : খোকন
আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত বলেছেন, সবকিছু ম্যান টু ম্যান ভেরি করে। বিজয়ী হলে বরিশালের উন্নয়ন করার নিশ্চয়তা আমি দিয়েছি। যার কারণে জনগণ আমাকে ভোট দেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

সেই সাথে বিএনপির সমর্থকরাও মনে করছে আমাকে ভোট দিতে পারলে নগরবাসী সেবা পাবে। দল-মত নির্বিশেষে সব মানুষ আমাকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেবে।

রোববার বেলা দেড়টায় নগরের সদর রোডে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় নির্বাচনের পরিবেশ আর প্রতিপক্ষ প্রার্থীর বিভিন্ন অভিযোগ খণ্ডন করে তিনি বলেন, যেহেতু আমি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আমার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ থাকতেই পারে, করতেই পারে। কিন্তু আমার দৃষ্টিতে সবকিছু স্বাভাবিক ও চমৎকার পরিবেশ দেখতে পাচ্ছি।

এখানে কোনো অস্বাভাবিক কিছু দেখতে পাচ্ছি না।
খোকন আরো বলেন, অভিযোগ যে কেউ করতে পারে। কোনো বিষয়ে আমি পাল্টা জবাবও দিতে চাই না। তবে আমি বলব নির্বাচনের পরিবেশটা ভালো আছে। এখানে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। সংবাদ সম্মেলনে তার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, সাবেক সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা আফরোজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আ’লীগ প্রার্থীর বহিরাগত নেতাকর্মীতে বরিশাল ছেয়ে গেছে : ইকবাল হোসেন তাপস বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বহিরাগত নেতাকর্মীতে বরিশালের বিভিন্ন হোটেল ও রেস্ট হাউজ ছেয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস।

তা ছাড়া ‘এলাকা ঘেরাও করে গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা বস্তি বা কলোনির ভোটারদের টাকা দিচ্ছে, নির্বাচন কমিশন একপাক্ষিক আচরণ অব্যাহত রেখেছে এবং শেষ সময়ে এসেও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি’ বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

রোববার সকাল ১০টায় তার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন তাপস। তিনি বলেন, শহরের হোটেল, রেস্ট হাউজ সবগুলো বহিরাগত লোকজনে ভরা। প্রশাসন বহিরাগত সরাতে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করছে না। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এখনো তৈরি হয়নি। স্থানীয় প্রশাসন নিরপেক্ষতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

খুবই দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, দু’টি গোয়েন্দা সংস্থা তারা আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে নগ্নভাবে ভোট চাইছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের সাধারণ কর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমরা এখন শঙ্কিত হয়ে পড়েছি। সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক মহসিন উল ইসলাম হাবুল উপস্থিত ছিলেন।