ঢাকা ১০:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পটুয়াখালীতে মশারি ব্যবহার করেন না ডেঙ্গু রোগীরা

পটুয়াখালীতে হু-হু করে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কপ্লেক্সেগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে নিয়ম-নীতি মানছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও আক্রান্ত রোগীরা। রোগীদের চিকিৎসায় চরম অব্যবস্থাপনার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শনিবার সরেজমিন দেখা গেছে, পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালটিতে শিশু-নারী-পুরুষসহ অন্তত ৩৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। পুরনো সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া এসব রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সার্বক্ষণিক মশারি ব্যবহার বাধ্যতামূলক থাকলেও বাস্তবে এমন চিত্র দেখা যায়নি। ভর্তি রোগীর একজনকেও মশারি ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। দুপুরে হাসপাতালে ডেঙ্গুর তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ডেঙ্গু চিকিৎসায় এমন অব্যবস্থাপনা বেরিয়ে আসে।

এ সময় ওয়ার্ডে দায়িত্বরত নার্সদের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা বলেন, এসব দেখার জন্য ডাক্তার এবং আমরা রয়েছি। আপনারা জেনে কী করবেন। কিছু জানতে চাইলে প্রথমে তত্ত্বাবধায়ক স্যারের অনুমতি নিয়ে আসেন। তার অনুমতি ব্যতীত ছবি তোলাও নিষেধ। পরে প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার দিলরুবা ইয়াসমিন লিজাকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

পটুয়াখালী প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পটুয়াখালী টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদ বলেন, ডেঙ্গু চিকিৎসায় এমন অব্যবস্থাপনা প্রথম থেকেই। এর আগে বিষয়টি পটুয়াখালী সিভিল সার্জনকে জানানো হলে তিনি মশারি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছিলেন। কিছুদিন না যেতেই সেই অব্যবস্থাপনা শুরু হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন অনিয়ম সুস্থ মানুষকে ঝুঁকিতে ফেলছে।

পটুয়াখালী স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, এ পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ৮৪ জন ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

শনিবার ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তির তালিকায় রয়েছেন- মারুফা (১৭), আবুল হাসান (২৫) সালেহা (৬০), হালিমা (৮), আকলিমা (২৩), সুমা (২৪), হাবিবুর হমান (৫৭), নিপু (২১), সাইফুল (২৫), রাকিব (২৪), লিজা (২০), আছোয়াদ (৯), কাইফ (২৫), সোহেল (২৪), জাফর (৩৫), মো. সোহরাব (৭০), কাকুলি (১৭), ইমরান (২৬), মুসা (২২), বুশরা (১৮), মনিরা (২১), রাফি (১৭), ইউনুচ (২৭), রাসেল (৩১), আশ্রাফ (৫৫), আলমগীর (৪৫), সাইফুল ইসলাম (২৯), লিজা (২০), আকলিমা (২৩), বুশরা (১৮), নুর জামান (৪৫), ইলিয়াস (২৪), রাকিব (১৯), শাহিদা (৩৫), শাহাদাত (১৪), জালাল সিকদারসহ (৫০) ৩৫ জন।

পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডাক্তার এসএম হাসান কবির বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবার মধ্যে প্রথমত মশারি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। তা না হলে সুস্থ ব্যক্তিরা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর আগেও ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠলে তিনি মশারি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছিলেন।

সিভিল সার্জন বলেন, এমনটা কেন হচ্ছে বুঝতে পারছি না। আমি তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে আলোচনা করে দেখছি।

ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় অব্যবস্থাপনার অভিযোগ জেলা প্রশাসক শরীফুল ইসলামকে জানালে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে গণমাধ্যমকে আশ্বস্ত করেন।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

পটুয়াখালীতে মশারি ব্যবহার করেন না ডেঙ্গু রোগীরা

আপডেট সময় : ১২:৪০:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ জুলাই ২০২৩

পটুয়াখালীতে হু-হু করে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কপ্লেক্সেগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে নিয়ম-নীতি মানছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও আক্রান্ত রোগীরা। রোগীদের চিকিৎসায় চরম অব্যবস্থাপনার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শনিবার সরেজমিন দেখা গেছে, পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালটিতে শিশু-নারী-পুরুষসহ অন্তত ৩৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। পুরনো সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া এসব রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সার্বক্ষণিক মশারি ব্যবহার বাধ্যতামূলক থাকলেও বাস্তবে এমন চিত্র দেখা যায়নি। ভর্তি রোগীর একজনকেও মশারি ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। দুপুরে হাসপাতালে ডেঙ্গুর তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ডেঙ্গু চিকিৎসায় এমন অব্যবস্থাপনা বেরিয়ে আসে।

এ সময় ওয়ার্ডে দায়িত্বরত নার্সদের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা বলেন, এসব দেখার জন্য ডাক্তার এবং আমরা রয়েছি। আপনারা জেনে কী করবেন। কিছু জানতে চাইলে প্রথমে তত্ত্বাবধায়ক স্যারের অনুমতি নিয়ে আসেন। তার অনুমতি ব্যতীত ছবি তোলাও নিষেধ। পরে প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার দিলরুবা ইয়াসমিন লিজাকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

পটুয়াখালী প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পটুয়াখালী টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদ বলেন, ডেঙ্গু চিকিৎসায় এমন অব্যবস্থাপনা প্রথম থেকেই। এর আগে বিষয়টি পটুয়াখালী সিভিল সার্জনকে জানানো হলে তিনি মশারি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছিলেন। কিছুদিন না যেতেই সেই অব্যবস্থাপনা শুরু হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন অনিয়ম সুস্থ মানুষকে ঝুঁকিতে ফেলছে।

পটুয়াখালী স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, এ পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ৮৪ জন ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

শনিবার ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তির তালিকায় রয়েছেন- মারুফা (১৭), আবুল হাসান (২৫) সালেহা (৬০), হালিমা (৮), আকলিমা (২৩), সুমা (২৪), হাবিবুর হমান (৫৭), নিপু (২১), সাইফুল (২৫), রাকিব (২৪), লিজা (২০), আছোয়াদ (৯), কাইফ (২৫), সোহেল (২৪), জাফর (৩৫), মো. সোহরাব (৭০), কাকুলি (১৭), ইমরান (২৬), মুসা (২২), বুশরা (১৮), মনিরা (২১), রাফি (১৭), ইউনুচ (২৭), রাসেল (৩১), আশ্রাফ (৫৫), আলমগীর (৪৫), সাইফুল ইসলাম (২৯), লিজা (২০), আকলিমা (২৩), বুশরা (১৮), নুর জামান (৪৫), ইলিয়াস (২৪), রাকিব (১৯), শাহিদা (৩৫), শাহাদাত (১৪), জালাল সিকদারসহ (৫০) ৩৫ জন।

পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডাক্তার এসএম হাসান কবির বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবার মধ্যে প্রথমত মশারি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। তা না হলে সুস্থ ব্যক্তিরা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর আগেও ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠলে তিনি মশারি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছিলেন।

সিভিল সার্জন বলেন, এমনটা কেন হচ্ছে বুঝতে পারছি না। আমি তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে আলোচনা করে দেখছি।

ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় অব্যবস্থাপনার অভিযোগ জেলা প্রশাসক শরীফুল ইসলামকে জানালে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে গণমাধ্যমকে আশ্বস্ত করেন।