ঢাকা ০৪:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দিনে শিক্ষক রাতে স্কুটি প্রশিক্ষক পটুয়াখালীর পাপড়ি

  • স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০১:২১:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুলাই ২০২৩
  • ১০৩ খবরটি দেখা হয়েছে

পাঁচ বছর আগে স্বামীর কাছে স্কুটি চালানো শিখে যাতায়াতের ভোগান্তি কমিয়েছেন অহিদা পাপড়ি। স্কুটিতে সন্তানদের স্কুলে আনা নেওয়াসহ নানা কাজ সারেন; কমেছে খরচও। নিজে সুবিধা পাওয়ায় অন্য নারীদের অনুপ্রাণিত করতে ‘লেডি বাইকার’ নামে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করেছেন তিনি। অনেক নারী এখন সেখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।

পেশায় শিক্ষিকা পাপড়ি পটুয়াখালী শহরের থানাপাড়া এলাকার ফরহাদ হোসেন খানের স্ত্রী। পটুয়াখালী সদর উপজেলার চর জৈনকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ শিক্ষক নারীদের স্কুটি চালানোর প্রশিক্ষণ দিয়ে সাড়া ফেলেছেন। এ কাজের জন্য টাকাও নেন ‘অল্প’।

প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টার পরে শহরের ঝাউবন এলাকায় পাপড়ি স্কুটি চালানো শেখান। সারাদিন ক্লাশে ছাত্র-ছাত্রীদের সামলে ‘ক্লান্ত’ পাপাড়ি প্রশিক্ষণের কাজটি করেন বেশ মনযোগ দিয়েই।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৭০ জনেরও বেশি নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন বলে জানালেন অহিদা পাপড়ি। শেখানোর জন্য তার দুটি স্কুটি রয়েছে; নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করেন বিভিন্ন সরঞ্জাম। স্কুলে চাকরির পাশাপাশি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কিছুটা হলেও বাড়তি আয় হচ্ছে তার।

শুরুর গল্পটা জানতে চাইলে পাপড়ি বলেন, “আমার বাসা থেকে স্কুল অনেক দূর। সেখানে আমাকে রিকশা নিয়ে যেতে হয়। আবার মাঝে মাঝে আমার সন্তাদেরও স্কুলে নামিয়ে দিতে হয়। এসব ঝামেলার কথা চিন্তা করে নিজেই স্কুটি চালানোর উদ্যোগ নেই। পরে আমার স্বামী আমাকে প্রশিক্ষণ দেন। তিনিও শিক্ষকতা করেন। দুজনেই ব্যস্ত থাকায় দুজনের সুবিধার্থে এই স্কুটি প্রশিক্ষণ নিয়ে আমি সহজে চলাচল করছি।

“পাঁচ বছরে যেহেতু আমার সময় ও অর্থ সাশ্রয় হয়েছে, তাই অন্য নারীদেরকেও সুবিধা দিতে স্কুটি শেখানোর উদ্যোগ নিয়েছি। কারণ অনেক মেয়েরাই চায় মোটরসাইকেল বা স্কুটি চালাতে। কিন্তু ভালো প্রশিক্ষকের অভাবে তা হয়ে ওঠে না।”

তিনি আরও জানান, পটুয়াখালীতে অনেক নারীই আছেন যারা, মহিলাদের কাছে শিখতে চান। এ চিন্তা থেকে ফেইসবুকে ‘লেডি বাইকার পটুয়াখালী’ নামে একটি পেইজ খুলে আগ্রহীদের যোগাযোগ করার আহ্বান জানান। এ জন্য খুবই সামান্য পরিমাণ রেজিস্ট্রেশন ফি নেন স্কুটির জ্বালানি ও মেরামতের খরচ চালাতে।

শুক্র ও শনিবার স্কুল ছুটি থাকলেও পাপড়ির প্রশিক্ষণে কেন্দ্র খোলা থাকে। এই দুদিন দিনের বেলা পটুয়াখালী খেলার মাঠ ও কৃষি বিমান অবতরণ কেন্দ্র (এয়ারপোর্ট) এলাকায় ক্লাশ নেন তিনি।

“সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করার পরে নারীদের শেখার বিষয়ে বেশ সাড়া পাচ্ছি।”

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

দিনে শিক্ষক রাতে স্কুটি প্রশিক্ষক পটুয়াখালীর পাপড়ি

আপডেট সময় : ০১:২১:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুলাই ২০২৩

পাঁচ বছর আগে স্বামীর কাছে স্কুটি চালানো শিখে যাতায়াতের ভোগান্তি কমিয়েছেন অহিদা পাপড়ি। স্কুটিতে সন্তানদের স্কুলে আনা নেওয়াসহ নানা কাজ সারেন; কমেছে খরচও। নিজে সুবিধা পাওয়ায় অন্য নারীদের অনুপ্রাণিত করতে ‘লেডি বাইকার’ নামে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করেছেন তিনি। অনেক নারী এখন সেখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।

পেশায় শিক্ষিকা পাপড়ি পটুয়াখালী শহরের থানাপাড়া এলাকার ফরহাদ হোসেন খানের স্ত্রী। পটুয়াখালী সদর উপজেলার চর জৈনকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ শিক্ষক নারীদের স্কুটি চালানোর প্রশিক্ষণ দিয়ে সাড়া ফেলেছেন। এ কাজের জন্য টাকাও নেন ‘অল্প’।

প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টার পরে শহরের ঝাউবন এলাকায় পাপড়ি স্কুটি চালানো শেখান। সারাদিন ক্লাশে ছাত্র-ছাত্রীদের সামলে ‘ক্লান্ত’ পাপাড়ি প্রশিক্ষণের কাজটি করেন বেশ মনযোগ দিয়েই।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৭০ জনেরও বেশি নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন বলে জানালেন অহিদা পাপড়ি। শেখানোর জন্য তার দুটি স্কুটি রয়েছে; নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করেন বিভিন্ন সরঞ্জাম। স্কুলে চাকরির পাশাপাশি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কিছুটা হলেও বাড়তি আয় হচ্ছে তার।

শুরুর গল্পটা জানতে চাইলে পাপড়ি বলেন, “আমার বাসা থেকে স্কুল অনেক দূর। সেখানে আমাকে রিকশা নিয়ে যেতে হয়। আবার মাঝে মাঝে আমার সন্তাদেরও স্কুলে নামিয়ে দিতে হয়। এসব ঝামেলার কথা চিন্তা করে নিজেই স্কুটি চালানোর উদ্যোগ নেই। পরে আমার স্বামী আমাকে প্রশিক্ষণ দেন। তিনিও শিক্ষকতা করেন। দুজনেই ব্যস্ত থাকায় দুজনের সুবিধার্থে এই স্কুটি প্রশিক্ষণ নিয়ে আমি সহজে চলাচল করছি।

“পাঁচ বছরে যেহেতু আমার সময় ও অর্থ সাশ্রয় হয়েছে, তাই অন্য নারীদেরকেও সুবিধা দিতে স্কুটি শেখানোর উদ্যোগ নিয়েছি। কারণ অনেক মেয়েরাই চায় মোটরসাইকেল বা স্কুটি চালাতে। কিন্তু ভালো প্রশিক্ষকের অভাবে তা হয়ে ওঠে না।”

তিনি আরও জানান, পটুয়াখালীতে অনেক নারীই আছেন যারা, মহিলাদের কাছে শিখতে চান। এ চিন্তা থেকে ফেইসবুকে ‘লেডি বাইকার পটুয়াখালী’ নামে একটি পেইজ খুলে আগ্রহীদের যোগাযোগ করার আহ্বান জানান। এ জন্য খুবই সামান্য পরিমাণ রেজিস্ট্রেশন ফি নেন স্কুটির জ্বালানি ও মেরামতের খরচ চালাতে।

শুক্র ও শনিবার স্কুল ছুটি থাকলেও পাপড়ির প্রশিক্ষণে কেন্দ্র খোলা থাকে। এই দুদিন দিনের বেলা পটুয়াখালী খেলার মাঠ ও কৃষি বিমান অবতরণ কেন্দ্র (এয়ারপোর্ট) এলাকায় ক্লাশ নেন তিনি।

“সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করার পরে নারীদের শেখার বিষয়ে বেশ সাড়া পাচ্ছি।”